1. monoarulhasanmanik@gmail.com : দৈনিক প্রাথমিক শিক্ষা বার্তা : দৈনিক প্রাথমিক শিক্ষা বার্তা
  2. info@www.prathomikshikshabarta.com : দৈনিক প্রাথমিক শিক্ষা বার্তা :
মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাষ্ট্র শিক্ষাখাতকে গুরুত্ব না দেয়ায় দেশে শিক্ষকদের মর্যাদাও কম: ভিসি আমানুল্লাহ/Teachers’ status in the country is low as the state does not give importance to the education sector: VC Amanullah যেসব ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় নতুন পে স্কেলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ হচ্ছে? হঠাৎ পা কেন ফুলেছে? আরটিজিএস লেনদেন হবে নতুন সূচিতে/RTGS transactions will be on a new schedule আগামী বছরের শুরু থেকেই নতুন পে স্কেলে বেতন পাবেন সরকারি কর্মচারীরা/Government employees will receive new pay scale from the beginning of next year বাহুতে কেন ব্যথা হয়, প্রতিকার কী পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান পড়াশোনা : স্বাস্থ্যবিধি/Fifth grade elementary science studies: Hygiene/ প্রাথমিকে ছুটি ৭৬ দিন থেকে কমিয়ে ৬০ দিন হচ্ছে: মহাপরিচালক /Primary school leave reduced from 76 days to 60 days: Director General / নিয়মিত মোটরবাইক চালান? কাঁধ, ঘাড়সহ শারীরিক জটিলতা এড়াতে পরামর্শগুলো মেনে চলুননিয়মিত মোটরবাইক চালান? কাঁধ, ঘাড়সহ শারীরিক জটিলতা এড়াতে পরামর্শগুলো মেনে চলুন/Do you ride a motorbike regularly? Follow these tips to avoid physical complications including shoulder and neck injuries.

দেশে ৫২ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক/52 percent of primary schools in the country do not have head teachers

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১৯৫ বার পড়া হয়েছে
দেশে ৫২ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক/52 percent of primary schools in the country do not have head teachers

দেশে শিক্ষার ভিত্তি বলে বিবেচিত প্রাথমিকে শিক্ষকের সংকট বেড়েই চলছে। প্রধান শিক্ষকের ৬৫ হাজারের বেশি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৩৪ হাজারের বেশি পদই শূন্য। অর্থাৎ প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে সাড়ে ২৪ হাজারের মতো সহকারী শিক্ষকের পদও ফাঁকা।

শিক্ষকের এই সংকটের প্রভাব পড়ছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রমেও। বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে।

মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতির কারণে এ সংকট দীর্ঘ হচ্ছে। এমনিতেই ঠিকমতো পড়াশোনার অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিখন–ঘাটতি নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে ওঠে। এর মধ্যে বিদ্যমান শিক্ষক–সংকট এ সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ জন্য এ সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারির (এপিএসসি) তথ্য বলছে, দেশে এখন মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৩০টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। সরকারি-বেসরকারি সব মিলিয়ে দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে এক কোটির মতো।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত সপ্তাহের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৬৫ হাজার ৪৫৭টি। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১০৬টি পদ শূন্য। এ ছাড়া সারা দেশে সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৩টি। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৫৩৬টি পদ শূন্য।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর মধ্যে ১৩ হাজার ৬৭৫টি পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান কয়েক দিন আগে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে শিক্ষকদেরই একটি পক্ষ মামলা করেছিল। এ নিয়ে স্থগিতাদেশ থাকায় পদোন্নতি দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি সমাধানের জন্য তাঁরা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। চাকরিতে কোটার বিষয়ে গত বছরের সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগবিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এটি হয়ে গেলে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, এত দিন ধরে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের কোটা ছিল। কিন্তু গত বছর সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির নিয়োগে নতুন কোটা নির্ধারণ করে সরকার। নতুন এ নিয়মে সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এখন বিষয়টি প্রাথমিকের নিয়োগবিধিতেও যুক্ত করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিয়োগবিধিটি এখন সরকারি কর্ম কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেখানে দেরি হচ্ছে।
কী সমস্যা হচ্ছে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষকেরা দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি তদারকি ও ক্লাসও নেন। ফলে প্রধান শিক্ষক না থাকলে এসব কাজে সংকট তৈরি হয়। এর প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মানও নিম্নগামী হতে থাকে।

নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, নেত্রকোনায় ১০টি উপজেলায় ১ হাজার ৩১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ওই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ১ হাজার ৩১৩টি। শুধু মদন উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে এখনো প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হয়নি। বাকি অনুমোদিত পদের মধ্যে কর্মরত প্রধান শিক্ষক আছেন ৭১৪ জন। বাকি ৫৯৯টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষকদের চলতি দায়িত্ব দিয়ে এসব বিদ্যালয় পরিচালনা করা হচ্ছে।

খালিয়াজুরি, কলমাকান্দা, আটপাড়া ও সদর উপজেলার অন্তত ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দ্বৈত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাতে অনেককে বেশ বেগ পেতে হয়।

একাধিক অভিভাবক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার শালদিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে ১৯২ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচটি শিক্ষকের পদ আছে। কিন্তু শিক্ষক আছেন চারজন। প্রধান শিক্ষকের পদটি প্রায় এক বছর ধরে শূন্য। এ জন্য পাঠদানের পাশাপাশি অফিসের কাজ তাঁকে সামলাতে হচ্ছে। এতে অনেকটা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক প্রধান হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও মডেল শিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন। এ ছাড়া আরও কিছু কাজ করতে হয় তাঁদের। কিন্তু এসব পদ শূন্য থাকার ফলে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা ব্যহত হচ্ছে।
আটকে আছে প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা
বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা, এর সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যোগ হয়)।

সর্বোচ্চ আদালতে রায়ে প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দেওয়ার কথা। কিন্তু এখনো বিষয়টি আটকে আছে। সরকারি সূত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক রিট করেছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় কেবল সেসব প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে সারা দেশের অন্য প্রধান শিক্ষকেরা ক্ষুব্ধ। এ নিয়ে ব্যাপক পরিমাণে মামলা ও আন্দোলনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকেরা বলছেন, সবার জন্য এটি কার্যকর না হলে প্রধান শিক্ষকেরা বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের পরিবর্তে আরও আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হবেন।

‘বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে পিছিয়ে থাকা এলাকার শিশুদের’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষার মানের উন্নয়ন না হলে দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন অসম্ভব। আর সেই উন্নয়নের মূল শর্ত হলো প্রতিটি বিদ্যালয়ে পর্যাপ্তসংখ্যক যোগ্য শিক্ষক নিশ্চিত করা এবং তাঁদের পদমর্যাদা দেওয়া। অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার এই ধারায় যদি পরিবর্তন না আসে, তবে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার ভিত আরও দুর্বল হবে, যার খেসারত দিতে হবে পুরো জাতিকে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার গঠিত পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিপুলসংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকা এবং সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, ‘নানা গবেষণায় দেখা গেছে, এমনিতেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত মানে শিক্ষা পাচ্ছে না। মৌলিক দক্ষতার দিক থেকেও তারা পিছিয়ে। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও শিক্ষার গুণগত মান রক্ষায় প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেশের অর্ধেকের বেশি বিদ্যালয়ে এখন প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে নেতৃত্বের বড় একটি ঘাটতি তৈরি হয়েছে।’

মাহবুব মোর্দেশ আরও বলেন, শুধু প্রধান শিক্ষকই নন, সহকারী শিক্ষকের ঘাটতিও রয়েছে। দেশের পিছিয়ে থাকা এলাকাগুলোতে এই সংকট আরও তীব্র, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই শিশুরা, যাদের সহায়তা প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রাধিকারযোগ্য একটি সমস্যা। সরকারের উচিত এ সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।*প্রতিবেদনে তথ্য:প্রথম আলো

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট