শরীরকে বিশ্রাম দেওয়ার উপায় হচ্ছে ঘুম। তবে ঘুম শুধু শরীরকে বিশ্রামই দেয় না, চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অনেকেই ভাবেন, সারা দিন সতেজ থাকার জন্য, কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই কেবল পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার। কিন্তু ভালো এবং যথেষ্ট ঘুম না হলে স্বাস্থ্যের ওপর, চোখের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।
যদি প্রতিদিনই ৬ ঘণ্টার কম ঘুম হয়, তাহলে নীরবে আপনার চোখের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। এতে নানাবিধ সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে চোখে কী কী সমস্যা হতে পারে, জেনে নিন—
শুষ্কতা ও জ্বালা, অস্বস্তি
একটানা পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চোখ থেকে অশ্রু বের হয় না। আর এর ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়।
এমনকি চোখ আর পরিষ্কারও থাকে না। কারণ এই পানি চোখকে পরিষ্কার রাখার কাজেও নিযুক্ত। ফলে শুষ্কতা থেকে লালচে ভাব, চুলকানি, জ্বালা হতে পারে। সারাক্ষণ মনে হবে, চোখে কিছু একটা আটকে আছে।
পরবর্তীতে চোখের গুরুতর সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
চোখের পাতা কাঁপা
অনেকেরই মাঝে মাঝে চোখের পাতা কাঁপার সমস্যা দেখা দেয়। এর সঙ্গে কুসংস্কারের কোনো সম্পর্ক নেই, রয়েছে স্বাস্থ্যের। এই রোগটিকে বলে ‘মায়োকাইমিয়া’। এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি চোখের পাতা কাঁপা।
আপনার চোখ যদি ক্লান্ত থাকে, তাহলে এটি প্রায়শই ঘটতে পারে। তা ছাড়া মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাবের কারণেও এমন হয়।
চোখের তলায় কালি, ফোলা চোখ
ঘুম কম হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখের তলায় কালি পড়া এবং ফুলে যাওয়া। ভালো ঘুম না হলেই এই সমস্যা দেখা দেবে। চোখের নিচের রক্তনালিগুলোর মধ্যে প্রতিক্রিয়া ঘটে। তাই জায়গাটি কালো দেখায়। অনিদ্রায় সাধারণত চোখ ফুলে যায়। আসলে চোখে তরল জমা হয় বলে চোখ ও চোখের তলা ফোলা দেখায়।
ঝাপসা দৃষ্টি, মনোযোগের অভাব
দীর্ঘক্ষণ কাজের পর চোখের বিশ্রামের প্রয়োজন। চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। তা না হলেই আপনার চোখের পক্ষে যেকোনো কিছুতেই মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে বা পড়ার চেষ্টা করলেও আপনার দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
সংক্রমণের ঝুঁকি
চোখের পানিতে থাকে লবণ, লিপিড ও প্রোটিন। চোখকে ব্যাক্টেরিয়া ও ধুলার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এই তরল। আপনি যদি পর্যাপ্ত ঘুম না পান, তাহলে চোখেও পর্যাপ্ত পরিমাণে অশ্রু তৈরি হয় না। অর্থাৎ আপনার চোখ জীবাণুর সংস্পর্শে বেশি আসে। এটি কনজাংটিভাইটিসের মতো চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
চাপ এবং আলো সহ্য করতে না পারা
ক্লান্ত চোখ বেশি আলো সহ্য করতে পারে না। অত্যধিক চাপ বোধ হতে পারে। ঘুম ভালো না হলে তীব্র আলো জ্বালানো ঘরে বসে থাকা বা ফোনের স্ক্রিন বা কম্পিউটারের মনিটর দেখা কঠিন হয়ে যায়। এর ফলে মাথাব্যথা, চোখে ব্যথা হতে পারে।সূত্র : আনন্দবাজার ডট কম