জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সমবায় সমিতিতে জমা করা অর্থ ফেরতের দাবিতে তৃতীয় দিনেও মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে বিক্ষোভে করেছে শত শত গ্রাহক।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী আমানতকারীরা। এক পর্যায়ে মূল ফটকে বসে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ অন্তত ২৯টি সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রশাসনিক সেবা বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ সেবা প্রত্যাশীরা।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শত শত গ্রাহক উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নিয়ে এ অফিস ঘেরাও শুরু করেন। এর আগে বুধবার এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে দেখা গেছে তাদের।
সমিতির অর্থ উদ্ধার সহায়তা কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী বলেন, দুই বছর ধরে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েছি, কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফেরা ফিরবো না।
কমিটির সদস্য সোনা মোল্লা জানান, অনেকে সন্তানদের স্কুল ফি দিতে পারছে না, চিকিৎসাও করাতে পারছে না। কয়েকজন গ্রাহক বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, প্রতারণার অভিযোগে থাকা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের আইনি ক্ষমতা সীমিত হলেও আমরা তদারকি চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রতারিত গ্রাহক মাহবুবুর রহমান রতন জানান, যতদিন না আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে। প্রশাসনের প্রতি তাদের আহ্বান দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ মানুষের অর্থ ও আস্থা ফিরিয়ে আনা হোক।
উল্লেখ্য, মাদারগঞ্জ উপজেলায় ১৭ সমবায় সমিতি গ্রাহকদের উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে এই অঞ্চলের ৩৫ হাজার গ্রাহকের প্রায় ১৫শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দেয় বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে এর আগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হলেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। সর্বশেষ গত তিন দিন ধরে উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেন ভুক্তভোগীরা।/ইত্তেফাক